Monday, May 4, 2020

বৈশাখের ৩য় দিন


সন্ধ্যার পরপরই হঠাৎ ঈশান কোণে কালো মেঘের ঘনঘটা। ক্ষাণিক সময়ের মধ্যেই কালবৈশাখী তার স্বরুপে হাজির হলো মেলা প্রাঙ্গণে। ভেঙ্গে তছনছ হয়ে গেলো মেলার স্টল। ভিজে একাকার হয়ে গিয়েছিল মেলায় আসা দর্শনার্থীরা। মাঠের মধ্যে ইচ্ছেকৃতভাবে বৃষ্টিতে ভিজতে থাকা যুগল দেখে আমারও খুব ইচ্ছে হচ্ছিল তাকে নিয়ে বৃষ্টিতে ভেজার।বাঙ্গালিয়ানার বহি:প্রকাশ হিসেবে চোখ ধাঁধানো জিন্স-টপস এর পরিবর্তে শাড়ি-পাঞ্জাবীর বেশভূষা নিতান্তই মনোমুগ্ধকর। বেশিক্ষণ  থাকা গেল না, চোখদুটো ধুসর হয়ে যেতে লাগল। তাই অগত্যা বাসায় ফেরা। সারা শহরজুড়ে তখনও প্রবল বৃষ্টি হচ্ছিল, থামার কোন সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে না। মনের ভেতরও বর্ষার তীব্রতাে আঁচ পেলাম। হারিয়ে গেলাম গভীর তন্দ্রাচ্ছন্নে। হঠাৎ সান্নিধ্য ফিরে পেয়ে নিজেকে আবিষ্কার করলাম ফোনের রিংটোনে। অপর পার্শ্বে র কণ্ঠে আবেগের পরিবর্তে উৎকণ্ঠা অনুভব করলাম। বৃষ্টি চিরে আবার মেলা প্রাঙ্গণে পৌঁছে গেলাম দায়িত্ববোধ থেকে। সারা শহর বিদুৎবিচ্ছিন্ন। ঝড় ও বৃষ্টি কিছুটা সময়ের জন্য হলেও প্রেমিক প্রেমিকাদের প্রেম নিবেদন করার সুযোগ দিয়েছিল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রেখে। তাকে খুঁজে পেতে বেশ কিছু সময় লাগছিল বৃষ্টি ও অন্ধকারের দরুন, কিন্তু বেশিক্ষণ বেগ পেতে হলো না। যখন সে আসলো অন্ধকারে পরীর মতই লাগছিল। দুজনে হাঁটতে শুরু করলাম শহুরে গলির মধ্যে দিয়ে, গন্তব্য ওকে ওদের বাসায় পৌঁছে দেয়া। চলার পথে তার দুটো হাত দিয়ে আমার এক হাত ধরে কাঁধে মাথা দিয়ে, বৃষ্টির মধ্যে চিরচেনা রং অন্ধকারে দুর্গম গিরিশৃঙ্গ জয় করার মতো একটুকু ভয়ও হয়নি। বৃষ্টি হলে শহরে রিকশা পাওয়া দায়। একে তো আবছায়া অন্ধকার তার উপর বৃষ্টি। অনেক কষ্টে রিকশা যোগাড় করে তার গন্তব্যস্থলের দিকে ধাবিত হলাম। পথিমধ্যে কাধেঁ মাথা ঠেকিয়ে তাহার আবেগময় ‍বার্তাকথন, আর পাখির চোখের ন্যায় আমার দিকে তাকানো অজান্তেই হারিয়ে গিয়েছিলাম বৃষ্টি বিলাসী প্রেমিকার চুলের গন্ধে। বনলতা সেনকে কখনো দেখা হয় নি। কিন্তু অন্ধকারে আমি ঠিকই আমার বনলতার অবয়বকে অনুভব করে নিয়েছিলাম জীবনানন্দের কবিতায় “চুল তার কবেকার বিদিশার নিশা, মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য ”। সম্ভিত ফিরে পেয়ে দেখলাম তাহার বাসার সম্মুখস্থলে চলে এসেছি। এর পর আর সামনে অবধি যাওয়া নিষেধ। ফিরে এলাম নিজের নীড়ে। পিছনে পড়ে রইল সারা জীবন রোমন্থন করার মতো তার সাথে কাটানো স্মৃতিময় একটি ঝড়ে ভেজা বর্ষণমুখর সন্ধ্যা।
ভালো থাকুক হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসা...

Wednesday, October 11, 2017

গ্রামের বাড়িতে এক সন্ধ্যা (Twilight at Native Village)

নভেম্বর ২০১৫
============

বর্ষাকাল শেষ হয়ে শীতের আগমনের অপেক্ষায়। যতই শীত আসছে ততই শূণ্যতার পরিমাণটা তিল তিল করে বাড়ছে। শহর ছেড়ে হঠাৎ ই গ্রামের বাড়িতে ছুটে এলাম। সন্ধ্যার পুর্বক্ষণে দিগন্তবিস্তৃত ফসলের মাঠের এক কোণে দাঁড়িয়ে সুর্যাস্ত, মধূর আবেগঘণ পরিবেশ। বুকের মাঝখানটায় কেমন যেন একপ্রকার ব্যাথা অনুভব হচ্ছে। দিগন্তের দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছে এ যেন সীমাহীন, সীমানাহীন। কি যেন নেই? কেউ একজন নেই? তাহলে কি তোমাকে? কোন উত্তর নেই? মাঠের চারপাশের গাছ-গাছালি মেঘের মত কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে গেছে, একঝাঁক বালিহাঁস আর কয়েকজোড়া শালিক উড়ে গেল মাথার উপর দিয়ে, আশেপাশের ঝোঁপ ঝাঁড়ে থেকে থেকে ডাহুক ডাকছে। একটু পড়েই আঁধারেরা জেগে উঠবে, আঁধারকেই স্বাগত জানাতে যেন প্রকৃতি উৎকণ্ঠা ভরে চেয়ে আছে। চারদিকে নেই শহরের যানজটের হর্ণ কিংবা মানুষের কোলাহল। দূরে কয়েকজন রাখাল, গরু আর ছাগল নিয়ে ক্ষীণপদে বাড়ির পানে ফিরে আসছে, আরও দূরে কিছু বালক দাঁড়িয়ে আছে, একজন বল করছে, দু’জন ব্যাট হাতে জয়ের জন্য রান তাড়া করছে। মাঠের থেকে একদল কৃষক রিক্তহস্তে ঘরের পানে ফিরছে। নিজেদের মধ্যে কিছু একটা বলাবলি করছে। নির্বাক আমি মনের ভেতর শত প্রশ্নের ঝড় তুলে বিন¤্রভরে আকাশের দিকে তাকিয়ে। সেই প্রশ্নগুলো যেগুলো এখন আর তাড়া করে না, ভাবিয়েও তোলে না কিংবা বুকের মধ্যিখানে চাপা একটা ব্যাথাও অনুভব হয়না। ঝুপ করে নিশ^ব্দে রাত নেমে এল। দুরে মাঠের পাশের ঘরগুলোতে সন্ধ্যাবাতি জ¦লে উঠল মিট মিট করে। প্রচ্ছন্ন একা আমি সুবিশাল মাঠের মাঝে দাঁড়িয়ে। সন্ধ্যাতারাটা একগাল হেসে বলে উঠল তুই ও কি আমার মত নিঃসঙ্গ? ওর বলাটা হয়তো শুনতে পাই নি। কিন্তু মাথার উপরে সন্ধ্যাতারাটা তার দলবল নিয়ে ঠিকই জেগে উঠেছে পুরো আকাশটা পাহাড়া দেওয়ার জন্য। সে এক অদ্ভুত অনুভূতি যা ভাষায় প্রকাশযোগ্য নয়, একাকীত্বের, তীব্রতার। এ অনুভূতি তোমাকে ভালোবাসার.....



Saturday, January 14, 2017

তোর চোখ....

তোর চোখ কি সেই আগের মতন এখনো তেমন?
এখনো স্বপ্নের জলে ভেজা ধোঁয়া? নীল নীল?
এখনো কি তেমন অথৈ? অতুল তেমন?

[সংগৃহীত]

Wednesday, December 31, 2014

অনেক আশা এবং প্রত্যাশা নিয়ে এসেছিল ২০১৪ সাল। কিছু আশা ভেঙ্গে দিয়ে এবং প্রত্যাশাগুলো অপূর্ণ রেখেই চিরাচরিত নিয়মেই দেখতে দেখতে হারিয়ে গেল অনন্ত কালের গর্ভে। তাই বলে কি আমরা থেমে আছি। আমরা তো ঠিকই আপন কক্ষপথে মৃত্যুর প্রহর গুনতে গুনতে এগিয়ে যাচ্ছি। এক ফোটা রক্তে যে পথের শুরু হয়েছিল মৃত্যুতেও শেষ হয় না সেই পথচলার। অতএব পুরোনোকে ভুলে নয় তার থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। সাথে সাথে নতুন বছরের ঝুড়ি থেকে রহস্য গুলোও মেলাতে হবে। তবেই হয়তো নতুনত্ব চলার পথে বাধা না হয়ে সঙ্গী হবে। 
স্বাগতম নতুন ইংরেজি বর্ষ ২০১৫.........................